জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম (ইংরেজি: National Botanical Garden of Bangladesh) বাংলাদেশে উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষণ, গবেষণা ও প্রদর্শনের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। কেন্দ্রটি ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন নামেও পরিচিত। উদ্যানটি ঢাকার মিরপুরে ঢাকা চিড়িয়াখানার পাশে অবস্থিত। ১৯৬১ সালে প্রায় ২০৮ একর (৮৪ হেক্টর) জায়গা জুড়ে উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকার আরেকটি উদ্যান বলধা গার্ডেন প্রশাসনিক দিক দিয়ে এই উদ্যানেরই অংশ। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উদ্ভিদ উদ্যান। প্রতিবছর প্রায় ১৫ লক্ষ দর্শনার্থী উদ্যানটিতে বেড়াতে আসেন।[২]
এর ভৌগলিক অবস্থানঃ ২৪°০০′ উত্তর ৯০°০০′ পূর্ব
পরিচ্ছেদসমূহ
ব্যবস্থাপনা ও সংগ্রহ
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বর্তমানে ১১৭টি গোত্রভুক্ত ৯৫২ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫৬টি প্রজাতির ৩৫ হাজার বৃক্ষ, ৩১০ প্রজাতির ১০ হাজার গুল্ম , ৩৭৮ প্রজাতির ১২ হাজার বিরুৎ ও লতা জাতীয় উদ্ভিদ। ২০৮ একর উদ্যানটি মোট ৫৭টি সেকশনে বিভক্ত। এতে আছে বিভিন্ন আকারের মোট ৭টি জলাশয়। জলাশয়গুলোর মোট আয়তন ১১ একর। একটি জলাশয়ের পাশে রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত ও ডেক।[২] আরও রয়েছে শাপলা পুকুর ও গোলাকৃতির পদ্মপুকুর। শাপলা পুকুরে বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে শাপলা ফোটে। একসময় শীতকালে বড় জলাশয়গুলোতে হাঁসজাতীয় পরিযায়ী পাখিরা আসত। এখন আর আসে না। জাতীয় উদ্যানের ১.৫ একর জুড়ে রয়েছে মৌসুমি ফুলের বাগান। সালভিয়া, মর্নিংগ্লোরি, মেরিগোল্ড, ডালিয়াসহ প্রায় ৫২ জাতের বিদেশি মৌসুমি ফুলের চাষ করা হয় এ বাগানে। বাগান ঘিরে রয়েছে একটি আঁকাবাঁকা কৃত্রিম লেক। ১৯৮০ সালে প্রায় ৩.৫ একর জায়গার উপর নির্মিত হয় উদ্যানের গোলাপ বাগান। দু'টি পৃথক বাগানে প্রায় ২০০ প্রজাতির গোলাপ সংগ্রহে রয়েছে। একটি গোলাপ বাগানের মাঝে রয়েছে গোলাকৃতির একটি জলাশয়। এই জলাশয়ে সংরক্ষিত রয়েছে ব্রাজিলের আমাজন লিলি। ১৯৮০-৮১ সালে নির্মান করা হয় উদ্যানের দেবদারু-ইউক্যালিপ্টাস বাগান। ইউক্যালিপ্টাসগুলো অস্ট্রেলিয়া থেকে সংগ্রহ করা। ১৬ প্রজাতির ইউক্যালিপ্টাস ও আকাশমণি রয়েছে এখানে। বাঁশবাগানে রয়েছে প্রায় ২২ প্রজাতির বাঁশ।[৩] গর্জন বাগানের উত্তর পাশে সৃষ্টি করা হয়েছে ভেষজ উদ্ভিদের বাগান। এই বাগানে রয়েছে কালমেঘ, তুলসী, আতমোরা, শতমূলী, পুনর্নভা, থানকুনি, আদা, বোতল ব্রাশ, তেলাকুচা, কুমারি লতা, বাসক, বচসহ হরেক ভেষজ উদ্ভিদের সংগ্রহ।[২]গ্রিন হাউজ ও নেট হাউজ
[[File:Orchid House at Bangladesh National Botanical Garden Mirpur.JPEG]]
উদ্যানের ক্যাকটাস গ্রিন হাউজে ৮০ প্রজাতির ক্যাকটাস ও সাকুলেন্ট সংরক্ষিত রয়েছে। গ্রিন হাউজটি ১৯৯৪ সালে নির্মিত হয়। বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাসের মধ্যে রয়েছে ওল্ডম্যান, ফিসহুক ক্যাকটাস, ম্যামিলারিয়া, ক্ষেপালিয়া, মেলো ক্যাকটাস, গোল্ডেন ব্যারেল, সিরিয়াম হেক্সোজেনাস, র্যাট টেইল, আপাংসিয়া সিডাম, হাওয়ার্থিয়া, পিকটোরিয়া ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্যাকটাস মেক্সিকো থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্কিড গ্রিন হাউজে দেশি-বিদেশি প্রায় ৮৫ প্রজাতির অর্কিড সংরক্ষিত রয়েছে। নেট হাউজে ছায়াতরু সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রায় ১০০ প্রজাতির ছায়াতরু রয়েছে এ হাউজে।[৩]
No comments:
Post a Comment