Sunday, February 5, 2017

Pablakhali Wildlife Sanctuary

এর ভৌগলিক অবস্থানঃ ২৩°১২′১৭.৭৮″ উত্তর ৯২°১৬′৫৬.২১″ পূর্ব


পাবলাখালী বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য।[১] এটি বাংলাদেশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। সুন্দরবনের পরে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংরক্ষিত বন।[২] বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের সংরক্ষিত বন এলাকার তালিকা অনুযায়ী পাবলাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের আয়তন ৪২ হাজার ৮৭ হেক্টর।[৩] পাবলাখালী পার্বত্য চট্টগ্রামের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে রাঙামাটি শহর থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই হ্রদের একেবারে উত্তর প্রান্তে কাসালং নদীর পাশে অবস্থিত। যেখানে হাতিসহ প্রায় কয়েক হাজার প্রজাতির বন্যপ্রাণী আর পাখির বসবাস। জলাভূমি হিসেবেও জায়গাটি গুরুত্বপূর্ণ। পাবলাখালী গেইম অভয়ারণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালের জুন মাসে।[৪] ১৯৮৩ সালে ঘোষিত হয় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে।

ইতিহাস

এই বন সম্পর্কে প্রথম তথ্য পাওয়া যায় ১৯৫৪ সালের এক জরিপে । সেসময় ২,৫৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কাসালং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটি অংশ ছিল পাবলাখালী এবং এর বিস্তৃতি ছিল প্রায় ৪৫০ বর্গকিলোমিটার। পরবর্তীতে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে এই বনের অনেক এলাকা হ্রদের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে এবং বনের আয়তন কিছুটা সংকুচিত হয়। ১৯৬২ সালের জুন মাসে বন্যপ্রাণী আর প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য এটিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র বা গেইম রিজার্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ১৯৮৩ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর এটিকে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে রাঙামাটি জেলার কাসালং রেঞ্জের দক্ষিণ-পূর্বে খাগড়াছড়ি জেলার সীমানা পর্যন্ত এই অভয়ারণ্যটি বিস্তৃত।


পাবলাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারন্যটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলা জুড়ে এর বিস্তৃত। এর আয়তন ৪২০৮৭.০ হেঃ। বনের প্রকৃতি ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বন। অভয়ারন্যটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন।
অভয়ারন্যের ভিতরে ও চারিদিকে সংখ্যালঘু উপজাতীয়দের বাস, যারা মূলত মৎস জীবি ও জুম চাষী, নিসর্গ নেট ওয়ার্কেও কর্মসূচী শুরুর পর এদের মধ্যে ২০ জন ইকোট্যুরগাইড, ইকো কটেজ, দোকান ইত্যাদিও মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। এখানে ইকোট্যুরিজম উন্নয়নের রয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা। ২০০৭ সালের রেকর্ড অনুযায়ী যে বছর এই অভয়ারন্যতে দর্শনার্থীর সংখ্যা ২৮৫০০।
অতীতে এ বনে ১৮৩ প্রজাতীর পাখি ৭৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর এবং আরও অনেক উভয়চর সরীসৃপের রেকর্ড থাকলেও এর হাল-নাগাদ তথ্য পাওয়া যায় না। সাম্বার হরিণ, মায়-হরিণ, শুকর, বনো-কুকুর, শিয়াল, বানর, খরগোশ, কাঠবিড়ালী, বেজী, বন বিড়াল ইত্যাদি এখানে পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতীয় সরিসৃপ ও পাখি।
এখানে বন বিভাগের একটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রাতে অবস্থান করা যায় না। মাঝে মাঝে দেখা মিলবে বুনো হাতির পাল। রাঙ্গামাটি শহর থেকে কাপ্তাই লেক হয়ে লঞ্চে প্রায় ৪/৫ ঘন্টায় যাওয়া যায় পাবলাখালী। এখানে ভ্রমনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনায় রাখতে হবে।

No comments:

Post a Comment